,

যশোরে শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

যশোর প্রতিনিধি: টানা দু’দিনের শিলাবৃষ্টি যশোর অঞ্চলের কৃষকদের সর্বনাশ ডেকে এনেছে। ক্ষেতে নুয়ে পড়া ধান নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। কারণ ক্ষতিগ্রস্ত ধান কাটা, পরিবহন ও মাড়াইয়ের লোক নেই। সবচেয়ে বেশি বিপাকে সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলার কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, যশোর জেলায় এবার এক লাখ ৫৪ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনেরও সম্ভাবনা আছে। এক সপ্তাহ পর থেকে ধান কাটা শুরু হবে।

এরই মধ্যে বৃহস্পতি ও শুক্রবার টানা ঝড়, শিলাবৃষ্টিতে ধানক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই করোনার কারণে ধান কাটা শ্রমিক সংকটে রয়েছেন কৃষকরা। তার ওপর শিলাবৃষ্টি তাদের বাড়তি বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

তাই ৬২টি ধান কাটার যন্ত্র দিয়ে কৃষকের ধান ঘরে তুলে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি বিভাগ। সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী বলেন, ‘বৃষ্টিতে ধানের খুবই ক্ষতি হয়েছে। এমনিতেই করোনার কারণে ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।

তার মধ্যে ঝড় বৃষ্টিতে ধান এলোমেলো করে দিয়েছে। আকাশের অবস্থা এখনো ভালো নেই। এ অবস্থায় থাকলে এবার ধান মাঠেই রেখে আসতে হবে। খুব চিন্তার মধ্যে পড়ে গেছি।’

তিনি বলেন, ‘শুনছি সরকার ধান কেটে দেবে। দ্রুত ব্যবস্থা করলে খুব ভালো হয়। করোনার কারণে ধানের বাজার খোলা নেই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা ধান কিনতে পারছেন না।’

সদর উপজেলার পুলেরহাট গ্রামের কৃষক আমির আলী জানান, চলতি বোরো মৌসুমে চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেন তিনি। কয়েক দিন পরই ধান ঘরে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে সে ধান শেষ করে দিয়ে গেছে। দাঁড়িয়ে আছে শুধু গাছটা।

পুলেরহাট এলাকার কৃষক ফজলুর গাজী বলেন, ‘সাত বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। ধানে রং চড়েছে। করোনার কারণে এবার সাতক্ষীরা থেকে শ্রমিক আসতে পারছে না। আর ৩-৪ দিন পর ধান কাটতে হবে। এমন সময় শিলাবৃষ্টিতে ধানগাছ ক্ষেতে মাটিতে পড়ে গেছে। এ বছর পেটের ভাত জোগাড় করাই কষ্ট হবে।’

জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর যশোরের উপ-পরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ধান ঘরে তোলার আগে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কারণে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

তবে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কাটা মাড়াইয়ের কাজ শেষে কৃষকরা ভালোভাবেই ফসল ঘরে তুলতে পারবে।’ তিনি জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ৩৮টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও ২৪টি রিপার মেশিন দিয়ে কৃষকের ধান কাটার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর